০৭৪. সূরা আল মুদ্দাসসির
আয়াতঃ ২০; রুকুঃ ০২; মাক্কী
পরম করুণাময় মেহেরবানী আল্লাহর নামে
﴿يَـٰٓأَيُّهَا ٱلْمُدَّثِّرُ﴾
১। হে বস্ত্র মুড়ি দিয়ে শয়নকারী,
﴿قُمْ فَأَنذِرْ﴾
২। ওঠো এবং সাবধান করে দাও,
﴿وَرَبَّكَ فَكَبِّرْ﴾
৩। তোমার রবের শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা করো,
﴿وَثِيَابَكَ فَطَهِّرْ﴾
৪। তোমার পোশাক পবিত্র রাখো,
﴿وَٱلرُّجْزَ فَٱهْجُرْ﴾
৫। অপবিত্রতা থেকে দূরে থাকো,
﴿وَلَا تَمْنُن تَسْتَكْثِرُ﴾
৬। বেশী লাভ করার জন্য ইহসান করো না
﴿وَلِرَبِّكَ فَٱصْبِرْ﴾
৭। এবং তোমার রবের জন্য ধৈর্য অবলম্বন করো।
﴿فَإِذَا نُقِرَ فِى ٱلنَّاقُورِ﴾
৮। তবে যখন শিংগায় ফুৎকার দেয়া হবে,
﴿فَذَٰلِكَ يَوْمَئِذٍۢ يَوْمٌ عَسِيرٌ﴾
৯। সেদিনটি অত্যন্ত কঠিন দিন হবে।
﴿عَلَى ٱلْكَـٰفِرِينَ غَيْرُ يَسِيرٍۢ﴾
১০। কাফেরদের জন্য মোটেই সহজ হবে না।
﴿ذَرْنِى وَمَنْ خَلَقْتُ وَحِيدًۭا﴾
১১। আমাকে এবং সে ব্যক্তিকে ছেড়ে দাও যাকে আমি একা সৃষ্টি করেছি।
﴿وَجَعَلْتُ لَهُۥ مَالًۭا مَّمْدُودًۭا﴾
১২। তাকে অঢেল সম্পদ দিয়েছি
﴿وَبَنِينَ شُهُودًۭا﴾
১৩। এবং আরো দিয়েছি সবসময় কাছে থাকার মত অনেক পুত্র সন্তান।
﴿وَمَهَّدتُّ لَهُۥ تَمْهِيدًۭا﴾
১৪। তার নেতৃত্বের পথ সহজ করে দিয়েছি।
﴿ثُمَّ يَطْمَعُ أَنْ أَزِيدَ﴾
১৫। এরপরও সে লালায়িত, আমি যেন তাকে আরো বেশী দান করি।
﴿كَلَّآ ۖ إِنَّهُۥ كَانَ لِـَٔايَـٰتِنَا عَنِيدًۭا﴾
১৬। তা কখনো নয়, সে আমার আয়াতসমূহের সাথে শত্রুতা পোষণ করে।
﴿سَأُرْهِقُهُۥ صَعُودًا﴾
১৭। অচিরেই আমি তাকে এক কঠিন স্থানে চড়িয়ে দেব।
﴿إِنَّهُۥ فَكَّرَ وَقَدَّرَ﴾
১৮। সে চিন্তা-ভাবনা করলো এবং একটা ফন্দি উদ্ভাবনের চেষ্টা করলো।
﴿فَقُتِلَ كَيْفَ قَدَّرَ﴾
১৯। অভিশপ্ত হোক সে, সে কি ধরনের ফন্দি উদ্ভাবনের চেষ্টা করলো?
﴿ثُمَّ قُتِلَ كَيْفَ قَدَّرَ﴾
২০। আবার অভিশপ্ত হোক সে, সে কি ধরনের ফন্দি উদ্ভাবনের চেষ্টা করলো?
﴿ثُمَّ نَظَرَ﴾
২১। অতঃপর সে মানুষের দিকে চেয়ে দেখলো।
﴿ثُمَّ عَبَسَ وَبَسَرَ﴾
২২। তারপর ভ্রুকুঞ্চিত করলো এবং চেহারা বিকৃত করলো।
﴿ثُمَّ أَدْبَرَ وَٱسْتَكْبَرَ﴾
২৩। অতঃপর পেছন ফিরলো এবং দম্ভ প্রকাশ করলো।
﴿فَقَالَ إِنْ هَـٰذَآ إِلَّا سِحْرٌۭ يُؤْثَرُ﴾
২৪। অবশেষে বললোঃ এ তো এক চিরাচরিত যাদু ছাড়া আর কিছুই নয়।
﴿إِنْ هَـٰذَآ إِلَّا قَوْلُ ٱلْبَشَرِ﴾
২৫। এ তো মানুষের কথা মাত্র।
﴿سَأُصْلِيهِ سَقَرَ﴾
২৬। শিগগিরই আমি তাকে দোযখে নিক্ষেপ করবো।
﴿وَمَآ أَدْرَىٰكَ مَا سَقَرُ﴾
২৭। তুমি কি জানো, সে দোযখ কি?
﴿لَا تُبْقِى وَلَا تَذَرُ﴾
২৮। যা জীবিতও রাখবে না আবার একেবারে মৃত করেও ছাড়বে না।
﴿لَوَّاحَةٌۭ لِّلْبَشَرِ﴾
২৯। গায়ের চামড়া ঝলসিয়ে দেবে।
﴿عَلَيْهَا تِسْعَةَ عَشَرَ﴾
৩০। সেখানে নিয়োজিত আছে উনিশ জন কর্মচারী।
﴿وَمَا جَعَلْنَآ أَصْحَـٰبَ ٱلنَّارِ إِلَّا مَلَـٰٓئِكَةًۭ ۙ وَمَا جَعَلْنَا عِدَّتَهُمْ إِلَّا فِتْنَةًۭ لِّلَّذِينَ كَفَرُوا۟ لِيَسْتَيْقِنَ ٱلَّذِينَ أُوتُوا۟ ٱلْكِتَـٰبَ وَيَزْدَادَ ٱلَّذِينَ ءَامَنُوٓا۟ إِيمَـٰنًۭا ۙ وَلَا يَرْتَابَ ٱلَّذِينَ أُوتُوا۟ ٱلْكِتَـٰبَ وَٱلْمُؤْمِنُونَ ۙ وَلِيَقُولَ ٱلَّذِينَ فِى قُلُوبِهِم مَّرَضٌۭ وَٱلْكَـٰفِرُونَ مَاذَآ أَرَادَ ٱللَّهُ بِهَـٰذَا مَثَلًۭا ۚ كَذَٰلِكَ يُضِلُّ ٱللَّهُ مَن يَشَآءُ وَيَهْدِى مَن يَشَآءُ ۚ وَمَا يَعْلَمُ جُنُودَ رَبِّكَ إِلَّا هُوَ ۚ وَمَا هِىَ إِلَّا ذِكْرَىٰ لِلْبَشَرِ﴾
৩১। আমি ফেরেশতাদের দোযখের কর্মচারী বানিয়েছি এবং তাদের সংখ্যাকে কাফেরদের জন্য ফিতনা বানিয়ে দিয়েছি। যাতে আহলে কিতাবদের দৃঢ় বিশ্বাস জন্মে। ঈমানদারদের ঈমান বৃদ্ধি পায়, আহলে কিতাব ও ঈমানদাররা সন্দেহ পোষণ না করে আর যাদের মনে রোগ আছে তারা এবং কাফেররা যেন বলে, এ অভিনব কথা দ্বারা আল্লাহ কি বুঝাতে চেয়েছে? এভাবে আল্লাহ যাকে চান পথভ্রষ্ট করেন এবং যাকে চান হিদয়াত দান করেন। তোমার রবের বাহিনী সম্পর্কে তিনি ছাড়া আর কেউ অবহিত নয়। আর দোযখের এ বর্ণনা এছাড়া আর কোন উদ্দেশ্যই নয় যে, মানুষ তা থেকে উপদেশ গ্রহণ করবে।
﴿كَلَّا وَٱلْقَمَرِ﴾
৩২। কখ্খনো না, চাঁদের শপথ,
﴿وَٱلَّيْلِ إِذْ أَدْبَرَ﴾
৩৩। আর রাতের শপথ যখন তার অবসান ঘটে।
﴿وَٱلصُّبْحِ إِذَآ أَسْفَرَ﴾
৩৪। ভোরের শপথ যখন তা আলোকোজ্জল হয়ে উঠে।
﴿إِنَّهَا لَإِحْدَى ٱلْكُبَرِ﴾
৩৫। এ দোযখও বড় জিনিসগুলোর একটি।
﴿نَذِيرًۭا لِّلْبَشَرِ﴾
৩৬। মানুষের জন্য ভীতিকর।
﴿لِمَن شَآءَ مِنكُمْ أَن يَتَقَدَّمَ أَوْ يَتَأَخَّرَ﴾
৩৭। যে অগ্রসর হতে চায় বা পেছনে পড়ে থাকতে চায় তাদের সবার জন্য।
﴿كُلُّ نَفْسٍۭ بِمَا كَسَبَتْ رَهِينَةٌ﴾
৩৮। প্রত্যেক ব্যক্তি তার কৃতকর্মের কাছে দায়বদ্ধ।
﴿إِلَّآ أَصْحَـٰبَ ٱلْيَمِينِ﴾
৩৯। তবে ডান দিকের লোকেরা ছাড়া
﴿فِى جَنَّـٰتٍۢ يَتَسَآءَلُونَ﴾
৪০। যারা জান্নাতে অবস্থান করবে।
﴿عَنِ ٱلْمُجْرِمِينَ﴾
৪১। সেখানে তারা অপরাধীদের জিজ্ঞেস করতে থাকবে
﴿مَا سَلَكَكُمْ فِى سَقَرَ﴾
৪২। কিসে তোমাদের দোযখে নিক্ষেপ করলো।
﴿قَالُوا۟ لَمْ نَكُ مِنَ ٱلْمُصَلِّينَ﴾
৪৩। তারা বলবেঃ আমরা নামায পড়তাম না।
﴿وَلَمْ نَكُ نُطْعِمُ ٱلْمِسْكِينَ﴾
৪৪। অভাবীদের খাবার দিতাম না।
﴿وَكُنَّا نَخُوضُ مَعَ ٱلْخَآئِضِينَ﴾
৪৫। সত্যের বিরুদ্ধে অপবাদ রটনাকারীদের সাথে মিলে আমরাও রটনা করতাম;
﴿وَكُنَّا نُكَذِّبُ بِيَوْمِ ٱلدِّينِ﴾
৪৬। প্রতিফল দিবস মিথ্যা মনে করতাম।
﴿حَتَّىٰٓ أَتَىٰنَا ٱلْيَقِينُ﴾
৪৭। শেষ পর্যন্ত আমরা সে নিশ্চিত জিনিসের মুখোমুখি হয়েছি।
فَمَا تَنفَعُهُمْ شَفَـٰعَةُ ٱلشَّـٰفِعِينَ﴾
৪৮। সে সময় সুপারিশকারীদের কোন সুপারিশ তাদের কাজে আসবে না।
﴿فَمَا لَهُمْ عَنِ ٱلتَّذْكِرَةِ مُعْرِضِينَ﴾
৪৯। এদের হলো কি যে এরা এ উপদেশবাণী থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে
﴿كَأَنَّهُمْ حُمُرٌۭ مُّسْتَنفِرَةٌۭ﴾
৫০। যেন তারা বাঘের ভয়ে
﴿فَرَّتْ مِن قَسْوَرَةٍۭ﴾
৫১। পালায়নপর বন্য গাধা।
﴿بَلْ يُرِيدُ كُلُّ ٱمْرِئٍۢ مِّنْهُمْ أَن يُؤْتَىٰ صُحُفًۭا مُّنَشَّرَةًۭ﴾
৫২। বরং তারা প্রত্যেকে চায় যে, তার নামে খোলা চিঠি পাঠানো হোক।
﴿كَلَّا ۖ بَل لَّا يَخَافُونَ ٱلْـَٔاخِرَةَ﴾
৫৩। তা কখখনো হবে না। আসল কথা হলো, এরা আখেরাতকে আদৌ ভয় করে না।
﴿كَلَّآ إِنَّهُۥ تَذْكِرَةٌۭ﴾
৫৪। কখখনো না এ তো একটি উপদেশ বাণী।
﴿فَمَن شَآءَ ذَكَرَهُۥ﴾
৫৫। এখন কেউ চাইলে এ থেকে শিক্ষা গ্রহণ করুক।
﴿وَمَا يَذْكُرُونَ إِلَّآ أَن يَشَآءَ ٱللَّهُ ۚ هُوَ أَهْلُ ٱلتَّقْوَىٰ وَأَهْلُ ٱلْمَغْفِرَةِ﴾
৫৬। আর আল্লাহর ইচ্ছা ছাড়া তারা কোন শিক্ষা গ্রহণ করবে না। একমাত্র তিনিই তাকওয়া বা ভয়ের যোগ্য। এবং (তাকওয়ার নীতি গ্রহণকারীদের) ক্ষমার অধিকারী।
— সমাপ্ত —