আল বুরূজ

নামকরণঃ

প্রথম আয়াতে اَلْبُرُوْجَ  শব্দটিকে এর নাম হিসেবে গণ্য করা হয়েছে।

নাযিলের সময়-কালঃ

এর বিষয়বস্তু থেকেই একথা সুস্পষ্ট হয়ে উঠেছে যে, এ সূরাটি মক্কা মুয়ায্‌যমায় এমন এক সময় নাযিল হয় যখন মুশরিকদের জুলুম-নিপীড়ন তুংগে উঠেছিল এবং তারা কঠিনতম শাস্তি দিয়ে মুসলমানদের ইসলাম থেকে বিচ্যূত করার চেষ্টা করছিল।

বিষয়বস্তু ও মূল বক্তব্যঃ

এর মূল বিষয়বস্তু হচ্ছে, ঈমানদারদের ওপর কাফেররা যে জুলুম করছিল সে সম্পর্কে তাদেরকে সতর্ক করা এবং ঈমানদারদেরকে এই মর্মে সান্ত্বনা দেয়া যে, যদি তারা এসব জুলুম-নিপীড়নের মোকাবিলায় অবিচল থাকে তাহলে তারা এর জন্য সর্বোত্তম পুরস্কার পাবে এবং আল্লাহ নিজেই জালেমদের থেকে বদলা নেবেন।

এ প্রসংগে সর্বপ্রথম আসহাবুল উখদূদের (গর্ত ওয়ালাদের) কাহিনী শুনানো হয়েছে। তারা ঈমানদারদেরকে আগুনে ভরা গর্তে ফেলে দিয়ে পুড়িয়ে মেরেছিল। এ কাহিনীর মাধ্যমে মু’মিন ও কাফেরদেরকে কয়েকটি কথা বুঝানো হয়েছে। একঃ গর্তওয়ালারা যেমন আল্লাহর অভিশাপ ও তাঁর শাস্তির অধিকারী হয়েছে তেমনি মক্কার মুশরিক সরদাররাও তার অধিকারী হচ্ছিল। দুইঃ ঈমানদাররা যেমন তখন ঈমান ত্যাগ করার পরিবর্তে আগুনে ভরা গর্তে নিক্ষিপ্ত হয়ে জীবন দেয়াকে বেছে নিয়েছিল, ঠিক তেমনিভাবে এখনও ঈমানদারদের ঈমানের পথ থেকে সামান্যতমও বিচ্যূত না হয়ে সব রকমের কঠিনতম শাস্তি ভোগ করা উচিত। তিনঃ যে আল্লাহকে মেনে নেবার কারণে কাফেররা বিরোধী হয়ে গেছে এবং ঈমানদাররা তাদের মেনে নেবার ওপর অবিচল রয়েছে, তিনি সবার ওপর ক্ষমতাশালী ও বিজয়ী, তিনি পৃথিবী ও আকাশের কর্তৃত্বের অধিকারী, নিজের সত্তায় তিনি নিজেই প্রশংসার অধিকারী এবং তিনি উভয় দলের অবস্থা দেখছেন। কাজেই নিশ্চিতভাবেই কাফেররা তাদের কুফরীর কারণে কেবল জাহান্নামের শাস্তি ভোগ করবে না বরং এই সংগে নিজেদের জুলুম-নিপীড়নের শাস্তিও তারা ভোগ করবে আগুনে দগ্ধীভূত হয়ে। অনুরূপভাবে যারা ঈমান এনে সৎকাজ করেছে তারা নিশ্চিতভাবে জান্নাতে যাবে এবং এটিই বৃহত্তম সাফল্য। তারপর কাফেরদেরকে এ মর্মে সতর্ক করে দেয়া হয়েছে যে, আল্লাহ অত্যন্ত শক্ত ও কঠোরভাবে পাকড়াও করে থাকেন। যদি তোমরা নিজেদের বিরাট দলীয় শক্তির ওপর ভরসা করে থাকো তাহলে তোমাদের চাইতে বড় দলীয় শক্তির অধিকারী ছিল ফেরাউন ও সামূদরা। তাদের সেনাবাহিনীর পরিণাম থেকে তোমরা শিক্ষা গ্রহণ করো। আল্লাহর অসীম শক্তি তোমাদেরকে চারদিক থেকে ঘিরে আছে। এই ঘেরাও কেটে বের হবার ক্ষমতা তোমাদের নেই। আর যে কুরআনকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করার জন্য তোমরা সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছো, তার প্রত্যেকটি শব্দ অপরিবর্তনীয়। এই কুরআনের প্রতিটি শব্দ লওহে মাহফুযের গায়ে এমনভাবে খোদিত আছে যে হাজার চেষ্টা করেও কেউ তা বদলাতে পারবে না।

তরজমা ও তাফসীর

পরম করুণাময় মেহেরবানী আল্লাহর নামে

﴿وَٱلسَّمَآءِ ذَاتِ ٱلْبُرُوجِ﴾

কসম মজবুত দুর্গ বিশিষ্ট আকাশের 

১. মূলে دَاتِ البُرُوْج বলা হয়েছে অর্থাৎ বুর্জ বিশিষ্ট আকাশ প্রাচীন জ্যোতির্বিদ্যা অনুযায়ী মুফাসসিরগণের কেউ কেউ এ থেকে আকাশের বারটি বুর্জ অর্থ করেছেন অন্যদিকে ইবনে আব্বাস রা., মুজাহিদ, কাতাদাহ, হাসান বসরী, যাহহাক ও সুদ্দীর মতে এর অর্থ হচ্ছে, আকাশের বিশাল গ্রহ ও তারকাসমূহ

﴿وَٱلْيَوْمِ ٱلْمَوْعُودِ﴾

এবং সেই দিনের যার ওয়াদা করা হয়েছে 

২. অর্থাৎ কিয়ামতের দিন

﴿وَشَاهِدٍۢ وَمَشْهُودٍۢ﴾

আর যে দেখে তার এবং সেই জিনিসের যা দেখা যায় 

৩. যে দেখে এবং যা দেখা যায়— এ ব্যাপারে মুফাসসিরগণের বিভিন্ন বক্তব্য পাওয়া যায় কিন্তু আমার মতে বক্তব্যের ধারাবাহিকতার সাথে যে কথাটি সম্পর্ক রাখে সেটি হচ্ছে, যে দেখে বলতে এখানে কিয়ামতের দিন উপস্থিত প্রত্যেক ব্যক্তিকে এবং যা দেখা যায় বলতে কিয়ামতকেই বুঝানো হয়েছে কিয়ামতের ভয়াবহ ও লোমহর্ষক ঘটনাবলী সেদিন যারা দেখে তারা প্রত্যেকেই দেখবে এটি মুজাহিদ, ইকরামা, যাহহকা, ইবনে নুজাইহ্ এবং অন্যান্য কতিপয় মুফাসসিরের বক্তব্য

﴿قُتِلَ أَصْحَـٰبُ ٱلْأُخْدُودِ﴾

মারা পড়েছে গর্তওয়ালারা যে গর্তে দাউ দাউ করে জ্বলা জ্বালানীর আগুন ছিল

﴿ٱلنَّارِ ذَاتِ ٱلْوَقُودِ﴾

যখন তারা সেই গর্তের কিনারে বসেছিল

﴿إِذْ هُمْ عَلَيْهَا قُعُودٌۭ﴾

এবং ঈমানদারদের সাথে 

﴿وَهُمْ عَلَىٰ مَا يَفْعَلُونَ بِٱلْمُؤْمِنِينَ شُهُودٌۭ﴾

তারা সবকিছু করছিল তা দেখছিল 

৪. যারা বড় বড় গর্তের মধ্যে আগুন জ্বালিয়ে ঈমানদারদেরকে তার মধ্যে ফেলে দিয়েছিল এবং তাদের জ্বলে পুড়ে মরার বীভৎস দৃশ্য নিজেদের চোখে দেখেছিল তাদেরকে এখানে গর্তওয়ালা বলা হয়েছে মারা পড়েছে অর্থ তাদের ওপর আল্লাহর লানত পড়েছে এবং তারা আল্লাহর আযাবের অধিকারী হয়েছে এ বিষয়টির জন্য তিনটি জিনিসের কসম খাওয়া হয়েছে প্রথম বুর্জ বিশিষ্ট আকাশের, দ্বিতীয় কিয়ামতের দিনের, যার ওয়াদা করা হয়েছে তৃতীয় কিয়ামতের ভয়াবহ ও লোমহর্ষক দৃশ্যাবলীর এবং সেই সমস্ত সৃষ্টির যারা এ দৃশ্যাবলী প্রত্যক্ষ করবে প্রথম জিনিসটি সাক্ষ্য দিচ্ছে, যে সর্বময় ক্ষমতাসম্পন্ন মহাশক্তিধর সত্ত্বা বিশ্ব-জাহানের বিশাল তারকা ও গ্রহরাজির ওপর কর্তৃত্ব করছেন তাঁর পাকড়াও থেকে এ তুচ্ছ নগণ্য মানুষ কেমন করে বাঁচতে পারে? দ্বিতীয় জিনিসটির কসম এজন্য খাওয়া হয়েছে যে, দুনিয়ায় তারা ইচ্ছামতো জুলুম করেছে কিন্তু এমন একটি দিন অবশ্যি আসবে যেদিনটি সম্পর্কে সমস্ত মানুষকে জানিয়ে দেয়া হয়েছে যে সেদিন প্রত্যেক মজলুমের বদলা দেয়া হবে এবং প্রত্যেক জালেমকে পাকড়াও করা হবে তৃতীয় জিনিসটির কসম খাওয়ার কারণ হচ্ছে এই যে, এ জালেমরা যেভাবে ওই ঈমানদারদের জ্বলে পুড়ে মরার দৃশ্য দেখেছে ঠিক তেমনি কিয়ামতের দিন এদের শাস্তি দেয়ার দৃশ্য সমগ্র সৃষ্টি প্রত্যক্ষ করবে

গর্তে আগুন জ্বালিয়ে ঈমানদারদেরকে তার মধ্যে নিক্ষেপ করার একাধিক ঘটনা হাদীসে বর্ণিত হয়েছে এ থেকে জানা যায়, এ ধরণের জুলুম ও নিপীড়নমূলক ঘটনা দুনিয়ায় কয়েকবার ঘটেছে

হযরত সুহাইব রুমী রা. এ ধরণের একটি ঘটনা রাসূলুল্লাহ সা. থেকে বর্ণনা করেন ঘটনাটি হচ্ছেঃ এক বাদশার কাছে একজন যাদুকর ছিল বৃদ্ধ বয়সে সে বাদশাকে বললো, একটি ছেলেকে আমার কাছে নিযুক্ত করো, সে আমার কাছ থেকে এ যাদু শিখে নেবে বাদশাহ যাদু শেখার জন্য যাদুকরের কাছে একটি ছেলেকে নিযুক্ত করলো কিন্তু সেই ছেলেটি যাদুকরের কাছে আসা যাওয়ার পথে একজন রাহেবের (যিনি সম্ভবত হযরত ঈসা আ. এর দ্বীনের অনুসারী একজন সাধক ছিলেন) সাক্ষাত করতে লাগলো তাঁর কথায় প্রভাবিত হয়ে সে ঈমান আনলো এমন কি তাঁর শিক্ষার গুণে সে অলৌকিক শক্তির অধিকারীও হয়ে গেলো সে অন্ধদের দৃষ্টি শক্তি ফিরিয়ে দিতে এবং কুষ্ঠরোগ নিরাময় করতে লাগলো ছেলেটি তাওহীদের প্রতি ঈমান এনেছে, একথা জানতে পেরে বাদশাহ প্রথমে রাহেবকে হত্যা করলো তারপর ছেলেটিকে হত্যা করতে চাইলো কিন্তু কোন অস্ত্র দিয়েই এবং কোনভাবেই তাকে হত্যা করতে পারলো না শেষে ছেলেটি বললো, যদি তুমি আমাকে হত্যা করতে চাও তাহলে প্রকাশ্য জনসমাবেশে بِاسْمِ رَبِّ الْغُلَمِ  বিসমি রাব্বিল গুলাম” (অর্থাৎ এই ছেলেটির রবের নামে) বাক্য উচ্চারণ করে আমাকে তীর মারো, তাতেই আমি মারা যাবো বাদশাহ তাই করলো ফলে ছেলেটি মারা গেলো এ ঘটনা প্রত্যক্ষ করে লোকেরা চীৎকার করে উঠলো, আমরা এই ছেলেটির রবের প্রতি ঈমান আনলাম বাদশাহর সভাসদরা তাকে বললো, এখন তো তাই হয়ে গেলো যা থেকে আপনি বাঁচতে চাচ্ছিলেন লোকেরা আপনার ধর্ম ত্যাগ করে এ ছেলেটির ধর্মগ্রহণ করেছে এ অবস্থা দেখে বাদশাহ অত্যন্ত ক্রুদ্ধ হলো সে রাস্তার পাশে গর্ত খনন করালো তাতে আগুন জ্বালালো যারা ঈমান ত্যাগ করতে রাজী হলো না তাদের সবাইকে তার মধ্যে নিক্ষেপ করলো (মুসনাদে আহমাদ, মুসলিম, নাসায়ী, তিরমিযী, ইবনে জারীর, আবদুর রাজ্জাক, ইবনে আবী শাইবা, তাবারানী, আবদ ইবনে হুমাইদ)

দ্বিতীয় ঘটনাটি বর্ণনা করেছেন হযরত আলী রা. তিনি বলেন, ইরানের এক বাদশাহ শরাব পান করে নিজের বোনের সাথে ব্যভিচার করে এবং উভয়ের মধ্যে অবৈধ সম্পর্ক স্থাপিত হয়ে যায় কথাটি প্রকাশ হয়ে গেলে বাদশাহ জনসম্মুখে ঘোষণা করে দেয় যে, আল্লাহ‌ বোনের সাথে বিয়ে হালাল করে দিয়েছেন লোকেরা তার একথা মানতে প্রস্তুত হয় না ফলে সে নানান ধরণের শাস্তি দিয়ে লোকদের একথা মানতে বাধ্য করতে থাকে এমনকি সে অগ্নিকুণ্ড জ্বালিয়ে যে ব্যক্তি তার একথা মানতে প্রস্তুত হয়নি তাকে তার মধ্যে নিক্ষেপ করতে থাকে হযরত আলী রা. বলেন, সে সময় থেকেই অগ্নি উপাসকদের মধ্যে রক্ত সম্পর্কের আত্মীয়কে বিয়ে করার পদ্ধতি প্রচলিত হয় (ইবনে জারীর)

তৃতীয় ঘটনাটি হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. সম্ভবত ইসরাঈলী বর্ণনা থেকে উদ্ধৃত করেছেন তিনি বলেনঃ বেবিলনের অধিবাসীরা বনী ইসরাঈলকে হযরত মূসা আ. এর দ্বীন থেকে বিচ্যূত করতে বাধ্য করেছিল এমন কি যারা তাদের কথা মানতে অস্বীকার করতো তাদেরকে জ্বলন্ত ভরা গর্তে নিক্ষেপ করতো (ইবনে জারীর, আবদ ইবনে হুমাইদ)

নাজরানের ঘটনাটিই সবচেয়ে বেশী প্রসিদ্ধি লাভ করেছে ইবনে হিশাম, তাবারী, ইবনে খালদূন, মু’জামুল বুলদান গ্রন্থ প্রণেতা ইত্যাদি মুসলিম ঐতিহাসিকগণ এ ঘটনাটি বর্ণনা করেছেন এর সংক্ষিপ্তসার হচ্ছেঃ হিময়ারের (ইয়ামন) বাদশাহ তুবান আসয়াদ আবু কারিবা একবার ইয়াসরিবে যায় সেখানে ইহুদিদের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে ইহুদি ধর্ম গ্রহণ করে এবং বনি কুরাইযার দু’জন ইহুদি আলেমকে সঙ্গে করে ইয়ামনে নিয়ে যায় সেখানে সে ব্যাপকভাবে ইহুদি ধর্মের প্রচার চালায় তারপর তার ছেলে যু-নুওয়াস তার উত্তরাধিকারী হয় সে দক্ষিণ আরবে ঈসায়ীদের কেন্দ্রস্থল নাজরান আক্রমণ করে সেখান থেকে ঈসায়ী ধর্মকে উৎখাত করা এবং সেখানকার অধিবাসীদেরকে জোরপূর্বক ইহুদি ধর্মে দীক্ষিত করাই ছিল তার লক্ষ্য (ইবনে হিশাম বলেন, নাজরানবাসীরা হযরত ঈসার আসল দ্বীনের ওপর প্রতিষ্ঠিত ছিল) নাজরান পৌঁছে সে লোকদেরকে ইহুদি ধর্মগ্রহণ করার আহবান জানায় লোকেরা অস্বীকার করে এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সে বিপুল সংখ্যক লোককে দাউ দাউ করে জ্বলা আগুনের কুয়ায় নিক্ষেপ করে জ্বালিয়ে দেয় এবং অনেককে হত্যা করে এভাবে মোট বিশ হাজার লোক নিহত হয় নাজরানবাসীদের মধ্য থেকে দাউস যু-সা’লাবান নামক এক ব্যক্তি কোনক্রমে প্রাণ রক্ষা করে পালিয়ে যায় এক বর্ণনা মতে, সে রোমের কায়সারের দরবারে চলে যায় এবং অন্য একটি বর্ণনা মতে সে চলে যায় হাবশার (ইথিওপিয়া) বাদশাহ নাজ্জাসীর দরবারে সেখানে সে এই জুলুমের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে প্রথম বর্ণনা অনুযায়ী রোমের কায়সার হাবশার বাদশাকে লেখেন এবং দ্বিতীয় বর্ণনা অনুযায়ী নাজ্জাশী কায়সারে কাছে নৌবাহিনীর জাহাজ সরবরাহের আবেদন জানান যাহোক সবশেষে হাবশার সত্তর হাজার সৈন্য আরইয়াত নামক একজন সেনাপতির পরিচালনাধীনে ইয়ামন আক্রমণ করে যু-নুওয়াস নিহত হয় ইহুদি রাষ্ট্রের পতন ঘটে ইয়ামন হাবশার ঈসায়ী রাষ্ট্রের অন্তর্ভুক্ত হয়

অন্যান্য ঐতিহাসিক তথ্য প্রমাণাদি থেকে মুসলিম ঐতিহাসিকদের এ বর্ণনার কেবল সত্যতাই প্রমাণিত হয় না বরং এ সম্পর্কিত আরো বিস্তারিত তথ্যাদিও জানা যায় সর্বপ্রথম ৩৪০ খৃস্টাব্দে ইয়ামন হাবশার ঈসায়ীদের দখলে আসে ৩৭৮ খৃঃ পর্যন্ত সেখানে তাদের রাজত্ব প্রতিষ্ঠিত থাকে এ সময় ঈসায়ী মিশনারীরা ইয়ামনে প্রবেশ করতে শুরু করে এরই নিকটবর্তী সময়ে ফেমিউন (Faymiyun) নামক একজন সংসার ত্যাগী সাধক পুরুষ, কাশফ ও কারামতের অধিকারী ঈসায়ী পর্যটক নাজরানে আসেন তিনি স্থানীয় লোকদেরকে মূর্তি পূজার গলদ বুঝাতে থাকেন তার প্রচার গুণে নাজরানবাসীরা ঈসায়ী ধর্মে দীক্ষিত হয় সে সময় তিনজন সরদার তাদের শাসন ব্যবস্থা পরিচালনা করতেন তাদের একজনকে বলা হতো সাইয়েদ তিনি উপজাতীয় সরদারদের মতো একজন বড় সরদার ছিলেন বিদেশ সংক্রান্ত বিষয়াবলী, সন্ধি চুক্তি এবং সেনাবাহিনী পরিচালনা তার দায়িত্বের অন্তর্ভুক্ত ছিল দ্বিতীয় জনকে বলা হতো আকেব তিনি আভ্যন্তরীণ বিষয়াবলী দেখাশুনা করতেন তৃতীয় জনকে বলা হতো উসকুফ (বিশপ) তিনি ছিলেন ধর্মীয় নেতা দক্ষিণ আরবে নাজরান ছিল একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এলাকা এটি ছিল একটি বৃহত্তম বাণিজ্য ও শিল্প কেন্দ্র এখানে তসর, চামড়া ও অস্ত্র নির্মাণ শিল্প উন্নতি লাভ করেছিল প্রসিদ্ধ ইয়ামনী বর্মও এখানে নির্মিত হতো এ কারণে নিছক ধর্মীয় কারণেই নয় বরং রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক কারণেও যু-নুওয়াস এ গুরুত্বপূর্ণ স্থানটি আক্রমণ করে নাজরানের সাইয়েদ হারেশাকে, সুরিয়ানী ঐতিহাসিকগণ যাকে Arethas বলেছেন, হত্যা করে তার স্ত্রী রুমার সামনে তার দুই কন্যাকে হত্যা করে এবং তাদের রক্ত পান করতে তাকে বাধ্য করে তারপর তাকেও হত্যা করে উসকুফ বিশপ পলের (Paul) শুকনো হাড় কবর থেকে বের করে এনে জ্বালিয়ে দেয় আগুন ভরা গর্তসমূহে নারী, পুরুষ, শিশু, যুবা, বৃদ্ধ, পাদরী, রাহেব সবাইকে নিক্ষেপ করে সামগ্রিকভাবে ত্রিশ থেকে চল্লিশ হাজার লোক নিহত হয়েছিল বলা হয় ৫২৩ খৃস্টাব্দে এ ঘটনা ঘটে অবশেষে ৫২৫ খৃস্টাব্দে হাবশীরা ইয়ামন আক্রমণ করে যু-নুওয়াস ও তার হিমইয়ারী রাজত্বের পতন ঘটায় প্রত্নতাত্ত্বিক গবেষকগণ ইয়ামন হিসনে গুরাবের যে শিলালিপি উদ্ধার করেছেন তা থেকেও এর সত্যতা প্রমাণিত হয়

খৃস্টীয় ষষ্ঠ শতকে ঈসায়ী লেখকদের বিভিন্ন লেখায় গর্তওয়ালাদের এই ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ পাওয়া যায় এর মধ্যে মূল ঘটনার সময় এবং এ ঘটনা যারা প্রত্যক্ষ করেছিল তাদের বিবরণ সহকারে লিখিত বেশ কিছু গ্রন্থ পাওয়া গেছে এর মধ্যে তিনটি গ্রন্থের রচয়িতারা এই ঘটনার সমসাময়িক তাদের একজন হচ্ছেনঃ প্রকোপিউস দ্বিতীয় জন কসমস ইনডিকোপ্লিউসটিস (Cosmos Indicopleustis) তিনি নাজ্জাশী এলিস বুয়ানের (Elesboan) নির্দেশে সে সময় বাতলিমুসের গ্রীক ভাষায় লিখিত বইগুলোর অনুবাদ করছিলেন এ সময় তিনি হাবশার সমুদ্রোপকূলবর্তী এডোলিশ (Adolis) শহরে অবস্থান করছিলেন তৃতীয় জন হচ্ছেন জোহান্নাস মালালা (Johnnes Malala)পরবর্তী বহু ঐতিহাসিক তাঁর রচনা থেকে ঘটনাটি উদ্ধৃতি করেছেন এদের পর এফেসুসের জোহান্নাসের (Johannes of Ephesus) নাম করা যায় তিনি ৫৮৫ খৃস্টাব্দে মারা যান তাঁর গীর্জার ইতিহাস গ্রন্থে নাজরানের ঈসায়ী সম্প্রদায়ের ওপর এই নিপীড়নের কাহিনী এ ঘটনার সমসাময়িক বর্ণনাকারী বিশপ শিমউনের (Simeon) একটি পত্র থেকে উদ্ধৃত করেছেন এ পত্রটি লিখিত হয় জাবলা ধর্ম মন্দিরের প্রধানের (Abbot Von Gabula) নামে ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী বিভিন্ন ইয়ামনবাসীর বর্ণনার মাধ্যমে শিমউন তাঁর এই পত্রটি তৈরি করেন এ পত্রটি ১৮৮১ খৃস্টাব্দে রোম থেকে এবং ১৮৮০ খৃস্টাব্দে ঈসায়ী শহীদানের অবস্থা বর্ণনা প্রসঙ্গে প্রকাশিত হয়

ইয়াকূবী পত্রিয়ার্ক ডিউনিসিউস (Patriarch Dionysius) ও জাকারিয়া সিদলিনি (Zacharia of Mitylene) তাদের সুরিয়ানী ইতিহাসেও এ ঘটনাটি উদ্ধৃত করেছেন নাজরানের ঈসায়ী সমাজ সম্পর্কিত ইয়াকূব সুরুজীর গ্রন্থেও এর উল্লেখ রয়েছে আর রাহা (Edessa) এর বিশপ পোলাস (PULUS) নাজরানের নিহতদের উদ্দেশ্যে শোকগীতি লিখেছেন এটি এখনো পাওয়া যায় সুরিয়ানী ভাষার বই “আল হিময়ারীন” এর ইংরেজী অনুবাদ (Book of the Himyarites) ১৯২৪ সালে লণ্ডন থেকে প্রকাশিত হয়েছে এ বইটি মুসলিম ঐতিহাসিকদের বর্ণনার সত্যতা প্রমাণ করে বৃটিশ মিউজিয়ামে সেই আমলের এবং তার নিকটবর্তী আমলের কিছু ইথিয়োপীয় শিলালিপি সংরক্ষিত রয়েছে এগুলো থেকেও এই ঘটনার সমর্থন পাওয়া যায় কিলবি তাঁর Arabian Highlands নামক সফরনামায় লিখেছেনঃ গর্তওয়ালাদের ঘটনা যেখানে সংঘটিত হয়েছিল সে জায়গাটি আজও নাজরানবাসীদের কাছে সুস্পষ্ট ‘উম্মু খারাক’ —এর কাছে এক জায়গায় পাথরের গায়ে খোদিত কিছু চিত্রও পাওয়া যায় আর নাজরানের কাবা যেখানে প্রতিষ্ঠিত ছিল বর্তমান নাজরানবাসীরা সে জায়গাটিও জানে

হাবশার ঈসায়ীরা নাজরান অধিকার করার পর সেখানে কাবার আকৃতিতে একটি ইমারত তৈরি করে মক্কার কাবার মোকাবিলায় এই ঘরটিকে তারা কেন্দ্রীয় মর্যাদা দিতে চাচ্ছিল এখানকার বিশপরা মাথায় পাগড়ী বাঁধতেন এই ঘরকে তারা হারাম শরীফ গণ্য করেন রোমান সম্রাটের পক্ষ থেকেও এই কাবাঘরের জন্য আর্থিক সাহায্য পাঠানো হতো এই নাজরানের কাবার পাদরী তাঁর সাইয়েদ, আকেব ও উসকুফের নেতৃত্বে ‘মুনাযিয়া’ (বিতর্ক) করার জন্য নবী সা. এর দরবারে হাযির হয়েছিলেন সেখানে যে বিখ্যাত ‘মুবাহিলা’র ঘটনা অনুষ্ঠিত হয় সূরা আলে ইমরানের ৬১ আয়াতে তা উল্লেখিত হয়েছে (দেখুন তাফহীমুল কুরআন, আলে ইমরানঃ ২৯ ও ৫৫ টীকা)

﴿وَمَا نَقَمُوا۟ مِنْهُمْ إِلَّآ أَن يُؤْمِنُوا۟ بِٱللَّهِ ٱلْعَزِيزِ ٱلْحَمِيدِ﴾

ওই ঈমানদারদের সাথে তাদের শত্রুতার এছাড়া আর কোন কারণ ছিল না যে, তারা সেই আল্লাহর প্রতি ঈমান এনেছিল 

﴿ٱلَّذِى لَهُۥ مُلْكُ ٱلسَّمَـٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضِ ۚ وَٱللَّهُ عَلَىٰ كُلِّ شَىْءٍۢ شَهِيدٌ﴾

যিনি মহাপরাক্রমশালী এবং নিজের সত্তায় নিজেই প্রশংসিত, যিনি আকাশ ও পৃথিবীর রাজত্বের অধিকারী আর সে আল্লাহ‌ সবকিছু দেখছেন 

৫. এ আয়াত গুলোতে মহান আল্লাহর এমন সব গুণাবলীর উল্লেখ করা হয়েছে যেগুলোর মাধ্যমে তাঁর প্রতি ঈমান আনার অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে আবার অন্যদিকে এগুলোর প্রতি ঈমান আনার কারণে যারা অসন্তুষ্ট ও বিক্ষুব্ধ হয় তারা জালেম

﴿إِنَّ ٱلَّذِينَ فَتَنُوا۟ ٱلْمُؤْمِنِينَ وَٱلْمُؤْمِنَـٰتِ ثُمَّ لَمْ يَتُوبُوا۟ فَلَهُمْ عَذَابُ جَهَنَّمَ وَلَهُمْ عَذَابُ ٱلْحَرِيقِ﴾

১০ যারা মু’মিন পুরুষ ও নারীদের ওপর জুলুম-নিপীড়ন চালিয়েছে, তারপর তা থেকে তওবা করেনি, নিশ্চিতভাবেই তাদের জন্য রয়েছে জাহান্নামের আযাব এবং জ্বালা-পোড়ার শাস্তি

৬. জাহান্নামের আযাব থেকে আবার আলাদাভাবে জ্বালা-পোড়ার শাস্তির উল্লেখ করার কারণ হচ্ছে এই যে, তারা মজলুমদেরকে আগুনে ভরা গর্তে নিক্ষেপ করে জীবন্ত পুড়িয়েছিল সম্ভবত এটা জাহান্নামের সাধারণ আগুন থেকে ভিন্ন ধরণের এবং তার চেয়ে বেশী তীব্র কোন আগুন হবে এ বিশেষ আগুনে তাদেরকে জ্বালানো হবে

﴿إِنَّ ٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ وَعَمِلُوا۟ ٱلصَّـٰلِحَـٰتِ لَهُمْ جَنَّـٰتٌۭ تَجْرِى مِن تَحْتِهَا ٱلْأَنْهَـٰرُ ۚ ذَٰلِكَ ٱلْفَوْزُ ٱلْكَبِيرُ﴾

১১ যারা ঈমান এনেছে ও সৎকাজ করেছে নিশ্চিতভাবেই তাদের জন্য রয়েছে জান্নাতের বাগান যার নিম্নদেশে প্রবাহিত হতে থাকবে ঝরণাধারা এটিই বড় সাফল্য 

﴿إِنَّ بَطْشَ رَبِّكَ لَشَدِيدٌ﴾

১২ আসলে তোমার রবের পাকড়াও বড় শক্ত 

﴿إِنَّهُۥ هُوَ يُبْدِئُ وَيُعِيدُ﴾

১৩ তিনিই প্রথমবার সৃষ্টি করেন আবার তিনিই দ্বিতীয় বার সৃষ্টি করবেন 

﴿وَهُوَ ٱلْغَفُورُ ٱلْوَدُودُ﴾

১৪ তিনি ক্ষমাশীল, প্রেমময়

﴿ذُو ٱلْعَرْشِ ٱلْمَجِيدُ﴾

১৫ আরশের মালিক, শ্রেষ্ঠ-সম্মানিত

﴿فَعَّالٌۭ لِّمَا يُرِيدُ﴾

১৬ এবং তিনি যা চান তাই করেন 

৭. “তিনি ক্ষমাশীল” বলে এই মর্মে আশান্বিত করা হয়েছে যে, কোন ব্যক্তি গোনাহ করা থেকে বিরত হয়ে যদি তাওবা করে তাহলে সে আল্লাহর রহমত লাভ করতে পারে ‘প্রেমময়’ বলে একথা বলা হয়েছে যে, তিনি নিজের সৃষ্টির প্রতি কোন শত্রুতা পোষণ করেন না অযথা তাদেরকে শাস্তি দেয়া তাঁর কাজ নয় বরং নিজের সৃষ্টিকে তিনি ভালোবাসেন তাকে তিনি কেবল তখনই শাস্তি দেন যখন সে বিদ্রোহাত্মক আচরণ করা থেকে বিরত হয় না “আরশের মালিক” বলে মানুষের মধ্যে এ অনুভূতি জাগানো হয়েছে যে সমগ্র বিশ্ব-জাহানের রাজত্বের তিনিই একমাত্র অধিপতি কাজেই তাঁর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে কেউ তাঁর হাত থেকে নিস্তার পেতে পারে না “শ্রেষ্ঠ সম্মানিত” বলে এ ধরণের বিপুল মর্যাদাসম্পন্ন সত্তার প্রতি অশোভন আচরণ করার হীন মনোবৃত্তির বিরুদ্ধে মানুষকে সতর্ক করা হয়েছে তাঁর শেষ গুণটি বর্ণনা করে বলা হয়েছে, “তিনি যা চান তাই করেন” অর্থাৎ আল্লাহ‌ যে কাজটি করতে চান তাতে বাধা দেবার ক্ষমতা এ সমগ্র বিশ্ব-জাহানে কারোর নেই

﴿هَلْ أَتَىٰكَ حَدِيثُ ٱلْجُنُودِ﴾

১৭ তোমার কাছে কি পৌঁছেছে সেনাদলের খবর

﴿فِرْعَوْنَ وَثَمُودَ﴾

১৮ ফেরাউন ও সামূদের সেনাদলের? 

৮. যারা নিজেদের দল ও জনশক্তির জোরে আল্লাহর এ যমীনে বিদ্রোহের ঝাণ্ডা বুলন্দ করছে এখানে তাদেরকে সম্বোধন করা হয়েছে বলা হচ্ছে, তোমাদের কি জানা আছে, ইতিপূর্বে যারা নিজেদের দলীয় শক্তির জোরে এ ধরণের বিদ্রোহ করেছিল তাদের পরিণাম কি হয়েছিল?

﴿بَلِ ٱلَّذِينَ كَفَرُوا۟ فِى تَكْذِيبٍۢ﴾

১৯ কিন্তু যারা কুফরী করেছে, তারা মিথ্যা আরোপ করার কাজে লেগে রয়েছে 

﴿وَٱللَّهُ مِن وَرَآئِهِم مُّحِيطٌۢ﴾

২০ অথচ আল্লাহ‌ তাদেরকে ঘেরাও করে রেখেছেন

﴿بَلْ هُوَ قُرْءَانٌۭ مَّجِيدٌۭ﴾

২১ (তাদের মিথ্যা আরোপ করায় এ কুরআনের কিছু আসে যায় না) 

﴿فِى لَوْحٍۢ مَّحْفُوظٍۭ﴾

২২ বরং এ কুরআন উন্নত মর্যাদা সম্পন্ন, সংরক্ষিত ফলকে লিপিবদ্ধ

৯. এর অর্থ হচ্ছে, এ কুরআনের লেখা অপরিবর্তনীয় এর বিলুপ্তি হবে না আল্লাহর এমন সংরক্ষিত ফলকে এর লেখাগুলো খোদিত রয়েছে যেখানে এর মধ্যে কোন রদবদল করার ক্ষমতা কারোর নেই এর মধ্যে যে কথা লেখা হয়েছে তা অবশ্যি পূর্ণ হবে সারা দুনিয়া একজোট হয়ে তাকে বাতিল করতে চাইলেও তাতে সফল হবে না

 

— সমাপ্ত —

শেয়ারঃ

সম্পাদকের ব্লগ

অনলাইন পাঠাগার

অন্যান্য তাফসীর গ্রন্থ

সকল সূরা

০০১

আল ফাতিহা

মাক্কী

৭ আয়াত

০০২

আল বাকারাহ

মাদানী

২৮৬ আয়াত

০০৩

আলে ইমরান

মাদানী

২০০ আয়াত

০০৪

আন নিসা

মাদানী

১৭৬ আয়াত

০০৫

আল মায়িদাহ

মাদানী

১২০ আয়াত

০০৬

আল আনআ’ম

মাক্কী

১৬৫ আয়াত

০০৭

আল আ’রাফ

মাক্কী

২০৬ আয়াত

০০৮

আল আনফাল

মাদানী

৭৫ আয়াত

০০৯

আত তাওবা

মাদানী

১২৯ আয়াত

০১০

ইউনুস

মাক্কী

১০৯ আয়াত

০১১

হূদ

মাক্কী

১২৩ আয়াত

০১২

ইউসুফ

মাক্কী

১১১ আয়াত

০১৩

আর রা’দ

মাক্কী

৪৩ আয়াত

০১৪

ইব্রাহীম

মাক্কী

৫২ আয়াত

০১৫

আল হিজর

মাক্কী

৯৯ আয়াত

০১৬

আন নাহল

মাক্কী

১২৮ আয়াত

০১৭

বনী ইসরাঈল

মাক্কী

১১১ আয়াত

০১৮

আল কাহফ

মাক্কী

১১০ আয়াত

মারইয়াম

০২০

ত্বা-হা

মাক্কী

১৩৫ আয়াত

০২১

আল আম্বিয়া

মাক্কী

১১২ আয়াত

০২২

আল হাজ্জ

মাদানী

৭৮ আয়াত

০২৩

আল মু’মিনূন

মাক্কী

১১৮ আয়াত

০২৪

আন নূর

মাক্কী

১১৮ আয়াত

০২৫

আল ফুরকান

মাক্কী

৭৭ আয়াত

০২৬

আশ শুআ’রা

মাক্কী

২২৭ আয়াত

০২৭

আন নামল

মাক্কী

৯৩ আয়াত

০২৮

আল কাসাস

মাক্কী

৮৮ আয়াত

০২৯

আল আনকাবূত

মাক্কী

৬৯ আয়াত

০৩০

আর রূম

মাক্কী

৬০ আয়াত

০৩১

লুকমান

মাক্কী

৩৪ আয়াত

০৩২

আস সাজদাহ

মাক্কী

৩০ আয়াত

০৩৩

আল আহযাব

মাদানী

৭৩ আয়াত

০৩৪

আস সাবা

মাক্কী

৫৪ আয়াত

০৩৫

ফাতির

মাক্কী

৫৪ আয়াত

০৩৬

ইয়াসিন

মাক্কী

৮৩ আয়াত

০৩৭

আস সাফফাত

মাক্কী

১৮২ আয়াত

০৩৮

ছোয়াদ

মাক্কী

৮৮ আয়াত

০৩৯

আয যুমার

মাক্কী

৮৮ আয়াত

০৪০

আল মু’মিন

মাক্কী

৮৫ আয়াত

০৪১

হা-মীম আস সাজদাহ

মাক্কী

৫৪ আয়াত

০৪২

আশ শূরা

মাক্কী

৫৩ আয়াত

০৪৩

আয যুখরুফ

মাক্কী

৮৯ আয়াত

০৪৪

আদ দুখান

মাক্কী

৫৯ আয়াত

০৪৫

আল জাসিয়াহ

মাক্কী

৩৭ আয়াত

০৪৬

আল আহক্বাফ

মাক্কী

৫৯ আয়াত

০৪৭

মুহাম্মাদ

মাদানী

৩৮ আয়াত

০৪৮

আল ফাতহ

মাদানী

২৯ আয়াত

০৪৯

আল হুজুরাত

মাদানী

১৮ আয়াত

০৫০

ক্বাফ

মাদানী

৪৫ আয়াত

০৫১

আয যারিয়াত

মাক্কী

৬০ আয়াত

০৫২

আত তূর

মাক্কী

৪৯ আয়াত

০৫৩

আন নাজম

মাক্কী

৬২ আয়াত

০৫৪

আল ক্বামার

মাক্কী

৫৫ আয়াত

০৫৫

আর রাহমান

মাদানী

৭৮ আয়াত

০৫৬

আল ওয়াকিআ’

মাক্কী

৯৬ আয়াত

০৫৭

আল হাদীদ

মাদানী

২৯ আয়াত

০৫৮

আল মুজাদালাহ

মাদানী

২২ আয়াত

০৫৯

আল হাশর

মাদানী

২২ আয়াত

০৬০

আল মুমতাহিনাহ

মাদানী

১৩৫ আয়াত

০৬১

আস সাফ

মাদানী

১৪ আয়াত

০৬২

আল জুমুআ’

মাদানী

১১ আয়াত

০৬৩

আল মুনাফিকুন

মাদানী

১১ আয়াত

০৬৪

আত তাগাবুন

মাদানী

১৮ আয়াত

০৬৫

আত তালাক্ব

মাদানী

১২ আয়াত

০৬৬

আত তাহরীম

মাদানী

১২ আয়াত

০৬৭

আল মুলক

মাক্কী

৩০ আয়াত

০৬৮

আল কালাম

মাক্কী

৫২ আয়াত

০৬৯

আল হাককাহ

মাক্কী

৫২ আয়াত

০৭০

আল মাআ’রিজ

মাক্কী

৪৪ আয়াত

০৭১

নূহ

মাক্কী

২৮ আয়াত

০৭২

আল জিন

মাক্কী

২৮ আয়াত

০৭৩

আল মুযযাম্মিল

মাক্কী

২০ আয়াত

০৭৪

আল মুদ্দাসসির

মাক্কী

২০ আয়াত

০৭৫

আল কিয়ামাহ

মাক্কী

৪০ আয়াত

০৭৬

আদ দাহর

মাদানী

৩১ আয়াত

০৭৭

আল মুরসালাত

মাক্কী

৫০ আয়াত

০৭৮

আন নাবা

মাক্কী

৫০ আয়াত

০৭৯

আন নাযিআ’ত

মাক্কী

৪৬ আয়াত

০৮০

আবাসা

মাক্কী

৪২ আয়াত

০৮১

আত তাকবীর

মাক্কী

২৯ আয়াত

০৮২

আল ইনফিতার

মাক্কী

১৯ আয়াত

০৮৩

আল মুতাফফিফীন

মাক্কী

৩৬ আয়াত

০৮৪

আল ইনশিকাক

মাক্কী

২৫ আয়াত

০৮৫

আল বুরূজ

মাক্কী

২২ আয়াত

০৮৬

আত তারিক

মাক্কী

১৭ আয়াত

০৮৭

আল আ’লা

মাক্কী

১৯ আয়াত

০৮৮

আল গাশিয়াহ

মাক্কী

২৬ আয়াত

০৮৯

আল ফাজর

মাক্কী

৩০ আয়াত

০৯০

আল বালাদ

মাক্কী

২০ আয়াত

০৯১

আশ শামস

মাক্কী

১৫ আয়াত

০৯২

আল লাইল

মাক্কী

২১ আয়াত

০৯৩

আদ দুহা

মাক্কী

১১ আয়াত

০৯৪

আলাম নাশরাহ

মাক্কী

৮ আয়াত

০৯৫

আত তীন

মাক্কী

৮ আয়াত

০৯৬

আল আলাক

মাক্কী

১৯ আয়াত

০৯৭

আল কাদর

মাক্কী

৫ আয়াত

০৯৮

আল বাইয়্যিনাহ

মাক্কী

৮ আয়াত

০৯৯

আল যিলযাল

মাদানী

৮ আয়াত

১০০

আল আ’দিয়াত

মাক্কী

১১ আয়াত

১০১

আল কারিআ’হ

মাক্কী

১১ আয়াত

১০২

আত তাকাসুর

মাক্কী

৮ আয়াত

১০৩

আল আসর

মাদানী

৮ আয়াত

১০৪

আল হুমাযাহ

মাক্কী

৯ আয়াত

১০৫

আল ফীল

মাক্কী

৫ আয়াত

১০৬

কুরাইশ

মাক্কী

৪ আয়াত

১০৭

আল মাউন

মাক্কী

৭ আয়াত

১০৮

আল কাউসার

মাক্কী

৩ আয়াত

১০৯

আল কাফিরূন

মাক্কী

৬ আয়াত

১১০

আন নাসর

মাদানী

৩ আয়াত

১১১

আল লাহাব

মাক্কী

৫ আয়াত

১১২

আল ইখলাস

মাক্কী

৪ আয়াত

১১৩

আল ফালাক

মাক্কী

৫ আয়াত

১১৪

আন নাস

মাক্কী

৬ আয়াত