আত তারিক

নামকরণঃ

প্রথম আয়াতে الطَّارِق শব্দটিকে এর নাম গণ্য করা হয়েছে।

নাযিলের সময়-কালঃ

বক্তব্য বিষয়ের উপস্থাপনা পদ্ধতির দিক দিয়ে মক্কা মুআ’যযমার প্রাথমিক সূরাগুলোর সাথে এর মিল দেখা যায়। কিন্তু মক্কার কাফেররা যখন কুরআন ও মুহাম্মাদ সা. এর দাওয়াতকে ক্ষতিগ্রস্ত করার জন্য সব রকমের প্রচেষ্টা চালাচ্ছিল ঠিক সে সময়ই এ সূরাটি নাযিল হয়। সর্বপ্রথম আকাশের তারকাগুলোকে এ মর্মে সাক্ষী হিসেবে পেশ করা হয়েছে যে, এ বিশ্ব-জাহানে কোন একটি জিনিসও নেই যা কোন এক সত্তার রক্ষনাবেক্ষণ ছাড়া নিজের জায়গায় প্রতিষ্ঠিত ও অস্তিত্বশীল থাকতে পারে। তারপর মানুষের দৃষ্টি তার নিজের সত্ত্বার প্রতি আকৃষ্ট করে বলা হয়েছে, দেখো কিভাবে এক বিন্দু শুক্র থেকে অস্তিত্ব দান করে তাকে একটি জ্বলজ্যান্ত গতিশীল মানুষে পরিণত করা হয়েছে। এরপর বলা হয়েছে, যে আল্লাহ এভাবে তাকে অস্তিত্ব দান করেছেন তিনি নিশ্চিতভাবেই তাকে দ্বিতীয়বার পয়দা করার ক্ষমতা রাখেন। দুনিয়ায় মানুষের যেসব গোপন কাজ পর্দার আড়ালে থেকে গিয়েছিল সেগুলোর পর্যালোচনা ও হিসেব-নিকেশই হবে এই দ্বিতীয়বার পয়দা করার উদ্দেশ্য। সে সময় নিজের কাজের পরিণাম ভোগ করার হাত থেকে বাঁচার কোন ক্ষমতাই মানুষের থাকবে না এবং তাকে সাহায্য করার জন্য কেউ এগিয়ে আসতেও পারবে না।

সবশেষে বলা হয়েছে, আকাশ থেকে বৃষ্টি বর্ষণ এবং মাটি থেকে গাছপালা ও ফসল উৎপাদন যেমন কোন খেলা তামাসার ব্যাপার নয় বরং একটি দায়িত্বপূর্ণ কাজ, ঠিক তেমনি কুরআনে যেসব প্রকৃত সত্য ও নিগূঢ় তত্ত্ব বর্ণনা করা হয়েছে সেগুলোও কোন হাসি তামাসার ব্যাপার নয়। বরং সেগুলো একেবারে পাকাপোক্ত ও অপরিবর্তনীয় কথা। কাফেররা এ ভুল ধারণা নিয়ে বসে আছে যে, তাদের চালবাজী ও কৌশল কুরআনের এই দাওয়াতকে ক্ষতিগ্রস্ত ও প্রতিহত করতে সক্ষম হবে। কিন্তু তারা জানে না, আল্লাহও একটি কৌশল অবলম্বন করছেন এবং তাঁর কৌশলের মোকাবিলায় কাফেরদের যাবতীয় চালবাজী ও কৌশল ব্যর্থ হয়ে যাবে। তারপর একটি বাক্যে রাসূলুল্লাহ সা.কে সান্ত্বনা এবং পর্দান্তরালে কাফেরদের ধমক দিয়ে কথা এভাবে শেষ করা হয়েছেঃ তুমি একটু সবর করো এবং কিছুদিন কাফেরদেরকে ইচ্ছে মতো চলার সুযোগ দাও। কিছুদিন যেতে না যেতেই তারা টের পেয়ে যাবে, তাদের চালবাজী ও প্রতারণা কুরআনকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে না। বরং যেখানে তারা কুরআনকে ক্ষতিগ্রস্ত ও প্রতিহত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে সেখানে কুরআন বিজয়ীর আসনে প্রতিষ্ঠিত হবে।

তরজমা ও তাফসীর

পরম করুণাময় মেহেরবানী আল্লাহর নামে

﴿وَٱلسَّمَآءِ وَٱلطَّارِقِ﴾

কসম আকাশের এবং রাতে আত্মপ্রকাশকারীর

﴿وَمَآ أَدْرَىٰكَ مَا ٱلطَّارِقُ﴾

তুমি কি জানো ঐ রাতে আত্মপ্রকাশকারী কি?

﴿ٱلنَّجْمُ ٱلثَّاقِبُ﴾

উজ্জ্বল তারকা

﴿إِن كُلُّ نَفْسٍۢ لَّمَّا عَلَيْهَا حَافِظٌۭ﴾

এমন কোন প্রাণ নেই যার ওপর কোন হেফাজতকারী নেই

১. হেফাজতকারী বলতে এখানে আল্লাহকেই বুঝানো হয়েছে তিনি আকাশ ও পৃথিবীর ছোট বড় সকল সৃষ্টির দেখাশুনা, তত্ত্বাবধান ও হেফাজত করছেন তিনিই সব জিনিসকে অস্তিত্ব দান করেছেন তিনিই সবকিছুকে টিকিয়ে রেখেছেন তিনি সব জিনিসকে ধারণ করেছেন বলেই প্রত্যেকটি জিনিস তার নিজের জায়গায় প্রতিষ্ঠিত আছে তিনি সব জিনিসকে তার যাবতীয় প্রয়োজন পূর্ণ করার এবং তাকে একটি নির্দিষ্ট সময়সীমা পর্যন্ত বিপদমুক্ত রাখার দায়িত্ব নিয়েছেন এ বিষয়টির জন্য আকাশের ও রাতের অন্ধকারে আত্মপ্রকাশকারী প্রত্যেকটি গ্রহ ও তারকার কসম খাওয়া হয়েছে আভিধানিক অর্থের দিক দিয়ে النَّجْمُ الشَّا قِبُ শব্দ একবচন হলেও এখানে এর মানে কিন্তু একটি তারকা নয় বরং তারকামণ্ডলী ফলে এখানে এ কসমের অর্থ এ দাঁড়ায়ঃ রাতের আকাশে এই যে অসংখ্য গ্রহ তারকা ঝলমল করতে দেখা যায় এদের প্রত্যেকটির অস্তিত্ব এ মর্মে সাক্ষ্য প্রদান করছে যে অবশ্যি কেউ একজন আছেন যিনি এগুলো সৃষ্টি করেছেন, এগুলোকে আলোকিত করেছেন, এগুলোকে শূন্যে ঝুলিয়ে রেখেছেন এবং এমনভাবে এদেরকে হেফাজত করছেন যার ফলে এরা নিজেদের স্থান থেকে ছিটকে পড়ে না এবং অসংখ্য তারকা একসাথে আবর্তন করার সময় একটি তারকা অন্য তারার সাথে ধাক্কা খায় না বা অন্য কোন তারা তাকে ধাক্কা দেয় না

﴿فَلْيَنظُرِ ٱلْإِنسَـٰنُ مِمَّ خُلِقَ﴾

কাজেই মানুষ একবার এটাই দেখে নিক কী জিনিস থেকে তাকে সৃষ্টি করা হয়েছে!

২. ঊর্ধ্বজগতের দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করার পর এবার মানুষকে তার নিজের সত্ত্বা সম্পর্কে একটু চিন্তা করার জন্য আহবান জানানো হয়েছে তাকে কিভাবে সৃষ্টি করা হয়েছে? কে পিতার দেহ থেকে নির্গত কোটি শুক্রকীটের মধ্য থেকে একটি শুক্রকীট এবং মায়ের গর্ত থেকে নির্গত অসংখ্য ডিম্বের মধ্য থেকে একটি ডিম্ব বাছাই করে দেয় এবং কোন এক সময় তাদের সম্মিলন ঘটায় এবং তারপর এক বিশেষ মানবীর গর্ভ ধারণ সংগঠিত হয়? গর্ভ সঞ্চারের পর কে মায়ের উদরে তার ক্রমবৃদ্ধি ও বিকাশ সাধন করে? তারপর কে তাকে একটি জীবিত শিশুর আকারে জন্মলাভ করার পর্যায়ে পৌঁছিয়ে দেয়? কে মায়ের গর্ভাধারের মধ্যেই তার শরীরিক কাঠামো এবং দৈহিক ও মানসিক যোগ্যতাসমূহের অনুপাত নির্ধারণ করে দেয়? কে জন্মের পর থেকে মৃত্যু পর্যন্ত অনবরত তার তত্ত্বাবধান করে? তাকে রোগ মুক্ত করে দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা করে নানা প্রকার আপদ-বিপদ থেকে বাঁচায় তার জন্য বহুতর সুযোগ-সুবিধা সৃষ্টি করে তার নিজের এসব সুযোগ-সুবিধা সৃষ্টি করার কোন ক্ষমতাই নেই এমন কি এগুলো সম্পর্কে কোন চেতনাই তার নেই এসব কিছুই কি এক মহান ও সর্বশক্তিমান আল্লাহর ব্যবস্থাপনা ও তত্ত্বাবধান ছাড়াই চলছে?

﴿خُلِقَ مِن مَّآءٍۢ دَافِقٍۢ﴾

তাকে সৃষ্টি করা হয়েছে প্রবলবেগে নিঃসৃত পানি থেকে,

﴿يَخْرُجُ مِنۢ بَيْنِ ٱلصُّلْبِ وَٱلتَّرَآئِبِ﴾

যা পিঠ ও বুকের হাড়ের মাঝখান দিয়ে বের হয়

৩. এখানে মূল আয়াতে সুলব صُلْب  ও তারায়েব تَرَائب শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে صُلْب  সুলব’ মেরুদণ্ডকে ও تَرَائب  তারয়েব বুকের পাঁজরকে বলা হয় যেহেতু যে উপাদান থেকে পুরুষ ও নারীর জন্ম হয় তা মেরুদণ্ড ও বুকের মধ্যস্থিত ধড় থেকে বের হয়, তাই বলা হয়েছে পিঠ ও বুকের মধ্যস্থল থেকে নির্গত পানি থেকে মানুষকে সৃষ্টি করা হয়েছে মানুষের হাত পা কর্তিত অবস্থায়ও এ উপাদান জন্ম নেয় তাই একথা বলা ঠিক নয় যে, সারা শরীর থেকে এ উপাদান বের হয় আসলে শরীরের প্রধান অঙ্গগুলোই হচ্ছে এর উৎস আর এ প্রধান অঙ্গগুলো সব ধড়ের সাথে সংযোজিত মস্তিষ্কের কথা আলাদা করে না বলার কারণ হচ্ছে এই যে, মেরুদণ্ড মস্তিষ্কের এমন একটি অংশ যার মাধ্যমে শরীরের সাথে মস্তিষ্কের সম্পর্ক বজায় রয়েছে**

** মাসিক তরজুমানুল কুরআনে এই ব্যাখ্যটি প্রকশিত হবার পর জনৈক ডাক্তার সাহেব মাওলানা মওদূদীকে রাহি. লেখেনঃ “আপনার ব্যাখ্যাটি আমি মনোযোগ সহকারে কয়েকবার পড়লাম কিন্তু আমি বিষয়টি বুঝতে পারলাম না কারণ বাস্তব পর্যবেক্ষণে আমরা দেখি, অণ্ডকোষে (Testicles) বীর্যের জন্ম হয় তারপর সরু সরু নালীর মাধ্যমে বড় বড় নালীর মধ্য দিয়ে অগ্রসর হয়ে তা পেটের দেয়ালের অভ্যন্তরে কোমরে হাড়ের ঠিক বরাবর একটি নালী (Inguinal Cannal) অতিক্রম করে নিকটবর্তী একটি গ্রন্থিতে প্রবেশ করে এই গ্রন্থিটির নাম Prostate. এরপর সেখান থেকে তরল পদার্থ নিয়ে এর নির্গমন হয় মেরুদণ্ড ও বুকের পাঁজরের মধ্যে এর অগ্রসর হবার ব্যাপারটি আমার বোধগম্য হলো না অবশ্য এর নিয়ন্ত্রণ এমন একটি নার্ভ সিষ্টেমের মাধ্যমে হয় যা মেরুদণ্ড ও বুকের পাঁজরের মাঝখানে জালের মতো ছড়িয়ে আছে তাও একটি বিশেষ সীমিত পর্যায়ে এর নিয়ন্ত্রন ব্যবস্থা আবার মস্তিষ্কের মধ্যস্থিত আর একটি গ্রন্থির তরল পদার্থের মাধ্যমে হয়ে থাকে কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে এখানে নির্গমনের (যা একটি নারীর মাধ্যমেই হতে পারে) আমার আবেদন, এর ব্যাখ্যা কি, এটা আপনি বিস্তারিতভাবে লেখেন আমি আপনাকে বিরক্ত করতে সাহস করলাম এজন্য যে, আপনি বৈজ্ঞানিক জ্ঞান চর্চায় বিশ্বাস করেন

এর জবাবে মাওলানা ১৯৭১ সালের নভেম্বরের তরজুমানুল কুরআন সংখ্যায় পরবর্তী প্যারাটি লেখেনঃ

যদিও শরীরের বিভিন্ন অংশের কার্যাবলী (Functions) আলাদা তবুও কোন অংশ নিজে একাকী কোন কাজ করে না বরং প্রত্যেকে অন্যের কার্যাবলীর সহায়তায় (Co-oridination) নিজের কাজ করার যোগ্যতা অর্জন করে নিঃসন্দেহে বীর্যের জন্ম হয় পুরুষাঙ্গে এবং সেখান থেকে তা বের হয়েও আসে একটা বিশেষ পথ দিয়ে কিন্তু পাকস্থলী, কলিজা, ফুসফুস, কিডনী, লিভার ও মস্তিষ্ক প্রত্যেকে স্বস্থানে নিজের কাজটি না করলে বীর্য জন্মাবার ও নির্গত হবার এ ব্যবস্থাটি কি স্বতঃস্ফূর্তভাবে নিজের কাজ করতে সক্ষম? অনুরূপভাবে দৃষ্টান্ত স্বরূপ দেখুন, কিডনীতে পেশাব তৈরি হয় এবং একটি নালীর সাহায্যে মূত্রাশয়ে পৌঁছে পেশাব নির্গত হবার পথ দিয়ে বাইরে বেরিয়ে আসে কিন্তু কিভাবে কোন কার্যক্রমের ফলে? রক্ত প্রস্তুতকারী ও তাকে সমগ্র দেহে আবর্তিত করে কিডনী পর্যন্ত পৌঁছিয়ে দেবার দায়িত্বে যেসব অঙ্গ নিয়োজিত তারা যদি নিজেদের দায়িত্ব পালন না করে তাহলে কি কিডনী একাই রক্ত থেকে পেশাবের উপাদানগুলো আলাদাকরে সেগুলোকে এক সাথে পেশাবের নালী দিয়ে বাইরে বের করে দিতে সক্ষম হবে? তাই কুরআন মজীদে বলা হয়নি যে, এ উপাদানগুলো মেরুদণ্ড ও পাঁজরের ( بِيْنَ الطُّلْبِ والتَّرَاءَب ) হাড় থেকে নির্গত হয় বরং বলা হয়েছে, “ঐ দু’টোর মধ্যখানে শরীরের যে অংশটি রয়েছে সেখান থেকে এ উপাদান গুলো নির্গত হয়” এতে একথা অস্বীকার করা হয়নি যে বীর্য তৈরি হবার ও তার নির্গমনের একটি বিশেষ কর্মপ্রণালী (Mechanism) রয়েছে, শরীরের বিশেষ কিছু অংশ এ কাজে নিয়োজিত থাকে বরং এ থেকে একথা প্রকাশ হয় যে, এ কর্মপ্রণালী স্বতঃপ্রবৃত্ত নয় মহান আল্লাহ মেরুদণ্ড ও পাঁজরের মধ্যস্থলে যেসব অঙ্গ সংস্থাপন করেছেন তাদের সমগ্র কর্মের সহায়তায় এ কাজটি সম্পাদিত হয় এজন্য আমি আগেই বলেছি যে, সমগ্র শরীর এ কাজে অংশ নেয়নি কেননা হাত-পা কর্তিত অবস্থায়ও এ ব্যবস্থাকে কর্মরত দেখা যায় তবে মেরুদণ্ড ও পাঁজরের মধ্যস্থলে যেসব বড় বড় অঙ্গ রয়েছে তাদের কোন একটিও যদি না থাকে তাহলে এ কর্মপ্রণালী অচল বলা যেতে পারে

ভ্রুণতত্ত্বের (Embryology) দৃষ্টিতে এটি একটি প্রমাণিত সত্য যে, ভ্রূণের মধ্যে (Foetus) যে অণ্ডকোষে (Testicle) বীর্যের জন্ম হয় তা মেরুদণ্ড ও বক্ষ পাঁজরের মধ্যস্থলে কিডনীর নিকটেই অবস্থান করে এবং সেখান থেকে ধীরে ধীরে পুরুষাঙ্গে নেমে আসে এ কার্য ধারা সংঘটিত হয় জন্মের পূর্বে আবার অনেক ক্ষেত্রে তার কিছু পরে কিন্তু তবুও তার স্নায়ু ও শিরাগুলোর উৎস সবসময় সেখানেই (মেরুদণ্ড ও পাঁজরের মধ্যস্থলে) থাকে বরং পিঠের নিকটবর্তী মহাধমনী (Artery) থেকে শিরাগুলো (Aorta) বের হয় এবং পেটের সমগ্র অঞ্চল সফর করে সেখানে রক্ত সরবরাহ করে এভাবে দেখা যায় অণ্ডকোষ আসলে পিঠের একটি অংশ কিন্তু শরীরের অতিরিক্ত উষ্ণতা সহ্য করার ক্ষমতা না থাকার কারণে তাকে পুরুষাঙ্গে স্থানান্তরিত করা হয়েছে উপরন্ত যদিও অণ্ডকোষ বীর্য উৎপাদন করে এবং তা মৌলিক কোষে (Seminal Vesicles) জমা থাকে তবুও মেরুদণ্ড ও পাঁজরের মধ্যস্থলই হয় তাকে বের করার কেন্দ্রীয় সঞ্চালন শক্তি মস্তিষ্ক থেকে স্নায়ুবিক প্রবাহ এ কেন্দ্রে পৌঁছার পর কেন্দ্রের সঞ্চালনে (Triger Action) মৌলিক কোষ সংকুচিত হয় এর ফলে তরল শুক্র (بَيْنِ ٱلصُّلْبِ وَٱلتَّرَآئِبِ) পিচকারীর ন্যায় প্রবল বেগে বের হয় এজন্য কুরআনের বক্তব্য চিকিৎসা শাস্ত্রের সর্বাধুনিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও অনুসন্ধান লব্ধ জ্ঞানের সাথ সামঞ্জস্যশীল

মাওলানার এই জবাবটি প্রকাশিত হবার পর দু’জন চিকিৎসা বিশেষজ্ঞ দু’টি বিভিন্ন স্থান থেকে মাওলানার বক্তব্য সমর্থন করে যে তথ্য সরবরাহ করেন তা সর্বশেষ প্যারায় সন্নিবেশিত হয়েছে —অনুবাদক

﴿إِنَّهُۥ عَلَىٰ رَجْعِهِۦ لَقَادِرٌۭ﴾

নিশ্চিতভাবেই তিনি (স্রষ্টা) তাকে দ্বিতীয় বার সৃষ্টি করার ক্ষমতা রাখেন

৪. অর্থাৎ যেভাবে তিনি মানুষকে অস্তিত্ব দান করেন এবং গর্ভ সঞ্চারের পর থেকে নিয়ে মৃত্যু পর্যন্ত তার দেখাশুনা করেন তা একথার সুস্পষ্ট প্রমাণ পেশ করে যে, তিনি মৃত্যুর পর আবার তাকে অস্তিত্বশীল করতে পারেন যদি তিনি প্রথমটির ক্ষমতা রেখে থাকেন এবং তারই বদৌলতে মানুষ দুনিয়ায় জীবন ধারণ করছে, তাহলে তিনি দ্বিতীয়টির ক্ষমতা রাখেন না, এ ধারণা পোষণ করার পেছনে এমন কি শক্তিশালী যুক্তি পেশ করা যেতে পারে? আল্লাহর এই শক্তিকে অস্বীকার করতে হলে আল্লাহ যে তাকে অস্তিত্বদান করেছেন সরাসরি একথাটিই অস্বীকার করতে হবে আর যে ব্যক্তি একথা অস্বীকার করবে তার মস্তিষ্ক বিকৃতি একদিন এমন পর্যায়ে পৌঁছে যাওয়া মোটেই অস্বাভাবিক ব্যাপার নয় যার ফলে সে দাবী করে বসবে, এ দুনিয়ায় সমস্ত বইপত্র একদিন ঘটনাক্রমে ছাপা হয়ে গেছে, দুনিয়ার সমস্ত শহর একদিন হঠাৎ ঘটনাক্রমে তৈরি হয়ে গেছে এবং এই দুনিয়ায় হঠাৎ একদিন এমন এক ঘটনা ঘটে গেছে যার ফলে সমস্ত কলকারখানা আপনা আপনি নির্মিত হয়ে তাতে উৎপাদন শুরু হয়ে গেছে আসলে মানুষ দুনিয়ায় যেসব কাজ করেছে ও করছে তার তুলনায় তার সৃষ্টি ও তার শারীরিক গঠনাকৃতি এবং তার মধ্যে কর্মরত শক্তি যোগ্যতাসমূহের সৃষ্টি এবং একটি জীবন্ত সত্তা হিসেবে তার টিকে থাকা অনেক বেশী জটিল কাজ এত বড় জটিল কাজ যদি এ ধরণের জ্ঞানবত্তা, উন্নত কলাকৌশল, আনুপাতিক ও পর্যাক্রমিক কার্যক্রম এবং সাংগঠনিক শৃংখলা সহকারে হঠাৎ ঘটনাক্রমে ঘটে যেতে পারে, তাহলে দুনিয়ায় আর কোন কাজটি আছে যাকে মস্তিস্ক বিকৃতি রোগে আক্রান্ত কোন ব্যক্তি হঠাৎ ঘটে যাওয়া কাজ বলবে না?

﴿يَوْمَ تُبْلَى ٱلسَّرَآئِرُ﴾

যেদিন গোপন রহস্যের যাচাই বাছাই হবে,

৫. গোপন রহস্য বলতে এখানে প্রত্যেক ব্যক্তির এমনসব কাজ বুঝানো হয়েছে যেগুলো রহস্যাবৃত্ত রয়ে গেছে আবার এমন সব কাজও বুঝানো হয়েছে, যেগুলো বাহ্যিক আকৃতিতে জন সমক্ষে এসে গেছে কিন্তু সেগুলোর পেছনে সক্রিয় নিয়ত, উদ্দেশ্য স্বার্থ ও আশা-আকাঙ্খা এবং সেগুলোর গোপন কার্যকারণ লোক চক্ষুর অন্তরালে থেকে গেছে কিয়ামতের দিন এসব কিছু উন্মুক্ত হয়ে সামনে এসে যাবে সেদিন কেবলমাত্র কে কি করেছে এর তদন্ত ও হিসেব-নিকেশ হবে না বরং কি কারণে, কি উদ্দেশ্য, কি নিয়তে ও কোন মানসিকতায় উদ্বুদ্ধ হয়ে এ কাজ করেছিল তারও হিসেব হবে অনুরূপভাবে এক ব্যক্তি যে কাজটি করেছে দুনিয়ায় তার কি প্রভাব পড়েছে, কোথায় তার প্রভাব পৌঁছেছে এবং কতদিন পর্যন্ত এ প্রভাব অব্যাহত থেকেছে— তাও সারা দুনিয়ার চোখ থেকে গোপন থেকেছে, এমনকি যে ব্যক্তি এ কাজটি করেছে তার চোখ থেকেও আর একটি রহস্যও শুধুমাত্র কিয়ামতের দিনেই উন্মুক্ত হবে এবং সেদিন এর পুরোপুরি তদন্ত ও হিসেব-নিকেশ হবে সেটি হচ্ছে, এক ব্যক্তি দুনিয়ায় যে বীজ বপন করে গিয়েছিল তার ফসল কতখানি পর্যন্ত কোন কোন পদ্ধতিতে সে এবং তার সাথে আর কে কে কাটতে থেকেছে?

﴿فَمَا لَهُۥ مِن قُوَّةٍۢ وَلَا نَاصِرٍۢ﴾

১০ সেদিন মানুষের নিজের কোন শক্তি থাকবে না এবং কেউ তার সাহায্যকারীও হবে না

﴿وَٱلسَّمَآءِ ذَاتِ ٱلرَّجْعِ﴾

১১ কসম বৃষ্টি বর্ষণকারী আকাশের

৬. আকাশের জন্য ذَاتِ الرَّجْعِ  (বৃষ্টি বষর্ণকারী) বিশেষণটি ব্যবহার করা হয়েছে ‘রজুআ’ (رجع শব্দের আভিধানিক অর্থ হচ্ছে, ফিরে আসা তবে পরোক্ষভাবে আরবী ভাষায় এ শব্দটি বৃষ্টির জন্য ব্যবহার করা হয় কারণ বৃষ্টি মাত্র একবার বর্ষিত হয়েই খতম হয়ে যায় না বরং একই মওসূমে বারবার এবং কখনো মওসূম ছাড়াই একাধিকবার ফিরে আসে এবং যখন তখন বর্ষিত হয় বৃষ্টিকে প্রত্যাবর্তনকারী বলার আর একটি কারণ হচ্ছে এই যে, পৃথিবীর সমুদ্রগুলো থেকে পানি বাষ্পের আকারে উঠে যায় আবার এই বাষ্পই পানির আকারে পৃথিবীতে বর্ষিত হয়

﴿وَٱلْأَرْضِ ذَاتِ ٱلصَّدْعِ﴾

১২ এবং (উদ্ভিদ জন্মাবার সময়) ফেটে যাওয়া যমীনের,

﴿إِنَّهُۥ لَقَوْلٌۭ فَصْلٌۭ﴾

১৩ এটি মাপাজোকা মীমাংসাকারী কথা,

﴿وَمَا هُوَ بِٱلْهَزْلِ﴾

১৪ হাসি-ঠাট্টা নয়

৭. অর্থাৎ যেমন আকাশ থেকে বৃষ্টি বর্ষণ এবং তার ফলে মাটি চিরে উদ্ভিদের অংকুর গজিয়ে ওঠা কোন হাসি-ঠাট্টার ব্যাপার নয় বরং একটি গুরুত্বপূর্ণ ও নিরেট সত্য, ঠিক তেমনি কুরআন মানুষকে আবার তার আল্লাহর দিকে ফিরে যেতে হবে এই মর্মে যে বিষয়টির খবর দিচ্ছে, সেটিও কোন হাসি-ঠাট্টার ব্যাপার নয় বরং সেটি একটি চূড়ান্ত ও মীমাংসাকারী কথা, একটি গুরুত্বপূর্ণ ও অপরিবর্তনীয় নিরেট সত্য সেটি পরিপূর্ণরূপে বাস্তবায়িত হয়েই ক্ষান্ত হবে

﴿إِنَّهُمْ يَكِيدُونَ كَيْدًۭا﴾

১৫ এরা কিছু চক্রান্ত করছে

৮. অর্থাৎ কাফেররা কুরআনের দাওয়াতকে ব্যর্থ করার জন্য নানা ধরণের অপকৌশলের আশ্রয় নিচ্ছে তারা ফুঁক দিয়ে এ প্রদীপটি নিভিয়ে দিতে চাচ্ছে মানুষের মনে সব রকমের সন্দেহের জাল বুনে দিচ্ছে একের পর এক মিথ্যা দোষারোপ করে যাচ্ছে কুরআনের দাওয়াত পেশকারী নবীর বিরুদ্ধে এভাবে দুনিয়ায় যাতে তাঁর কথা বিস্তার লাভ করতে না পারে এবং তিনি যে কুফরী ও জাহেলিয়াতের আঁধার দূর করতে চান তা যাতে চারদিক আচ্ছন্ন করে রাখে সে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে

 

— সমাপ্ত —

শেয়ারঃ

সম্পাদকের ব্লগ

অনলাইন পাঠাগার

অন্যান্য তাফসীর গ্রন্থ

সকল সূরা

০০১

আল ফাতিহা

মাক্কী

৭ আয়াত

০০২

আল বাকারাহ

মাদানী

২৮৬ আয়াত

০০৩

আলে ইমরান

মাদানী

২০০ আয়াত

০০৪

আন নিসা

মাদানী

১৭৬ আয়াত

০০৫

আল মায়িদাহ

মাদানী

১২০ আয়াত

০০৬

আল আনআ’ম

মাক্কী

১৬৫ আয়াত

০০৭

আল আ’রাফ

মাক্কী

২০৬ আয়াত

০০৮

আল আনফাল

মাদানী

৭৫ আয়াত

০০৯

আত তাওবা

মাদানী

১২৯ আয়াত

০১০

ইউনুস

মাক্কী

১০৯ আয়াত

০১১

হূদ

মাক্কী

১২৩ আয়াত

০১২

ইউসুফ

মাক্কী

১১১ আয়াত

০১৩

আর রা’দ

মাক্কী

৪৩ আয়াত

০১৪

ইব্রাহীম

মাক্কী

৫২ আয়াত

০১৫

আল হিজর

মাক্কী

৯৯ আয়াত

০১৬

আন নাহল

মাক্কী

১২৮ আয়াত

০১৭

বনী ইসরাঈল

মাক্কী

১১১ আয়াত

০১৮

আল কাহফ

মাক্কী

১১০ আয়াত

মারইয়াম

০২০

ত্বা-হা

মাক্কী

১৩৫ আয়াত

০২১

আল আম্বিয়া

মাক্কী

১১২ আয়াত

০২২

আল হাজ্জ

মাদানী

৭৮ আয়াত

০২৩

আল মু’মিনূন

মাক্কী

১১৮ আয়াত

০২৪

আন নূর

মাক্কী

১১৮ আয়াত

০২৫

আল ফুরকান

মাক্কী

৭৭ আয়াত

০২৬

আশ শুআ’রা

মাক্কী

২২৭ আয়াত

০২৭

আন নামল

মাক্কী

৯৩ আয়াত

০২৮

আল কাসাস

মাক্কী

৮৮ আয়াত

০২৯

আল আনকাবূত

মাক্কী

৬৯ আয়াত

০৩০

আর রূম

মাক্কী

৬০ আয়াত

০৩১

লুকমান

মাক্কী

৩৪ আয়াত

০৩২

আস সাজদাহ

মাক্কী

৩০ আয়াত

০৩৩

আল আহযাব

মাদানী

৭৩ আয়াত

০৩৪

আস সাবা

মাক্কী

৫৪ আয়াত

০৩৫

ফাতির

মাক্কী

৫৪ আয়াত

০৩৬

ইয়াসিন

মাক্কী

৮৩ আয়াত

০৩৭

আস সাফফাত

মাক্কী

১৮২ আয়াত

০৩৮

ছোয়াদ

মাক্কী

৮৮ আয়াত

০৩৯

আয যুমার

মাক্কী

৮৮ আয়াত

০৪০

আল মু’মিন

মাক্কী

৮৫ আয়াত

০৪১

হা-মীম আস সাজদাহ

মাক্কী

৫৪ আয়াত

০৪২

আশ শূরা

মাক্কী

৫৩ আয়াত

০৪৩

আয যুখরুফ

মাক্কী

৮৯ আয়াত

০৪৪

আদ দুখান

মাক্কী

৫৯ আয়াত

০৪৫

আল জাসিয়াহ

মাক্কী

৩৭ আয়াত

০৪৬

আল আহক্বাফ

মাক্কী

৫৯ আয়াত

০৪৭

মুহাম্মাদ

মাদানী

৩৮ আয়াত

০৪৮

আল ফাতহ

মাদানী

২৯ আয়াত

০৪৯

আল হুজুরাত

মাদানী

১৮ আয়াত

০৫০

ক্বাফ

মাদানী

৪৫ আয়াত

০৫১

আয যারিয়াত

মাক্কী

৬০ আয়াত

০৫২

আত তূর

মাক্কী

৪৯ আয়াত

০৫৩

আন নাজম

মাক্কী

৬২ আয়াত

০৫৪

আল ক্বামার

মাক্কী

৫৫ আয়াত

০৫৫

আর রাহমান

মাদানী

৭৮ আয়াত

০৫৬

আল ওয়াকিআ’

মাক্কী

৯৬ আয়াত

০৫৭

আল হাদীদ

মাদানী

২৯ আয়াত

০৫৮

আল মুজাদালাহ

মাদানী

২২ আয়াত

০৫৯

আল হাশর

মাদানী

২২ আয়াত

০৬০

আল মুমতাহিনাহ

মাদানী

১৩৫ আয়াত

০৬১

আস সাফ

মাদানী

১৪ আয়াত

০৬২

আল জুমুআ’

মাদানী

১১ আয়াত

০৬৩

আল মুনাফিকুন

মাদানী

১১ আয়াত

০৬৪

আত তাগাবুন

মাদানী

১৮ আয়াত

০৬৫

আত তালাক্ব

মাদানী

১২ আয়াত

০৬৬

আত তাহরীম

মাদানী

১২ আয়াত

০৬৭

আল মুলক

মাক্কী

৩০ আয়াত

০৬৮

আল কালাম

মাক্কী

৫২ আয়াত

০৬৯

আল হাককাহ

মাক্কী

৫২ আয়াত

০৭০

আল মাআ’রিজ

মাক্কী

৪৪ আয়াত

০৭১

নূহ

মাক্কী

২৮ আয়াত

০৭২

আল জিন

মাক্কী

২৮ আয়াত

০৭৩

আল মুযযাম্মিল

মাক্কী

২০ আয়াত

০৭৪

আল মুদ্দাসসির

মাক্কী

২০ আয়াত

০৭৫

আল কিয়ামাহ

মাক্কী

৪০ আয়াত

০৭৬

আদ দাহর

মাদানী

৩১ আয়াত

০৭৭

আল মুরসালাত

মাক্কী

৫০ আয়াত

০৭৮

আন নাবা

মাক্কী

৫০ আয়াত

০৭৯

আন নাযিআ’ত

মাক্কী

৪৬ আয়াত

০৮০

আবাসা

মাক্কী

৪২ আয়াত

০৮১

আত তাকবীর

মাক্কী

২৯ আয়াত

০৮২

আল ইনফিতার

মাক্কী

১৯ আয়াত

০৮৩

আল মুতাফফিফীন

মাক্কী

৩৬ আয়াত

০৮৪

আল ইনশিকাক

মাক্কী

২৫ আয়াত

০৮৫

আল বুরূজ

মাক্কী

২২ আয়াত

০৮৬

আত তারিক

মাক্কী

১৭ আয়াত

০৮৭

আল আ’লা

মাক্কী

১৯ আয়াত

০৮৮

আল গাশিয়াহ

মাক্কী

২৬ আয়াত

০৮৯

আল ফাজর

মাক্কী

৩০ আয়াত

০৯০

আল বালাদ

মাক্কী

২০ আয়াত

০৯১

আশ শামস

মাক্কী

১৫ আয়াত

০৯২

আল লাইল

মাক্কী

২১ আয়াত

০৯৩

আদ দুহা

মাক্কী

১১ আয়াত

০৯৪

আলাম নাশরাহ

মাক্কী

৮ আয়াত

০৯৫

আত তীন

মাক্কী

৮ আয়াত

০৯৬

আল আলাক

মাক্কী

১৯ আয়াত

০৯৭

আল কাদর

মাক্কী

৫ আয়াত

০৯৮

আল বাইয়্যিনাহ

মাক্কী

৮ আয়াত

০৯৯

আল যিলযাল

মাদানী

৮ আয়াত

১০০

আল আ’দিয়াত

মাক্কী

১১ আয়াত

১০১

আল কারিআ’হ

মাক্কী

১১ আয়াত

১০২

আত তাকাসুর

মাক্কী

৮ আয়াত

১০৩

আল আসর

মাদানী

৮ আয়াত

১০৪

আল হুমাযাহ

মাক্কী

৯ আয়াত

১০৫

আল ফীল

মাক্কী

৫ আয়াত

১০৬

কুরাইশ

মাক্কী

৪ আয়াত

১০৭

আল মাউন

মাক্কী

৭ আয়াত

১০৮

আল কাউসার

মাক্কী

৩ আয়াত

১০৯

আল কাফিরূন

মাক্কী

৬ আয়াত

১১০

আন নাসর

মাদানী

৩ আয়াত

১১১

আল লাহাব

মাক্কী

৫ আয়াত

১১২

আল ইখলাস

মাক্কী

৪ আয়াত

১১৩

আল ফালাক

মাক্কী

৫ আয়াত

১১৪

আন নাস

মাক্কী

৬ আয়াত